অগ্নিবীণা বাসে হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।
আগে ওকে বারবার দেখেছি
নীলরঙের শাড়িতে
নীল অপরাজিত ফুলের মতো ;
আজ পরেছে লাল রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
কৃষ্ণচূড়ার মতো লাল মুখখানি ঘিরে রেশমের কাপড়।
মনে হল আজ, লাল রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব রণক্ষেত্রের রক্তবিন্দুর মত নিকৃষ্টতর।
থমকে যাচ্ছে আমার সমস্ত আত্মাটা;
চেনা মানুষকে দেখলেম অচেনার কারুকার্যে।
হঠাৎ হৃদয়ের সমস্ত উওাপ সামলে নিয়ে
আমাকে করলো সালাম।
কথাদের পথ গেল খুলে,
আলাপ হলো শুরু —
কেমন আছ, কেমন চলছে জীবন, সাংসারিক কি হয়েছো ইত্যাদি।
সে তাকিয়ে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
দিলো দু-একটি জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুজা যাচ্ছে তার চাহনিতে এক বিষন্নতা
কেন এ-সব কথা!
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।
আমি ছিলাম পাশের সিটে ;
এক সময়ে আঙুল নেড়ে কাছে আসতে বললে
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলাম ওর পাশে
গাড়ির গর্জনের আড়ালে
বললো মৃদুস্বরে,
“কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথায় সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টপে
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
সত্য করে বলবে তো?
আমি বললাম, “বলব”
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো
“আমাদের হারিয়ে গেল যে সময়
তা কি চিরতরে হারালো?
তার কি আর খানিকটা নেই বাকি ?
রইলাম আমি চুপ করে;
তারপর বললাম,
“ রাতের সব জোৎস্নায় আছে,
আমাবস্যার গভীর””
তার মনে ইতস্ততা লাগলো, কি জানি বানিয়ে বললাম নাকি!
ও বললো, “আচ্ছা ” এখন থাকুক এসব কথা,
সবাই নেমে গেল পরের স্টপে
আমি চললাম আত্মার নিশ্চুপ কান্না শুনতে শুনতে।
দারুণ লিখেছেন! আরো পড়তে চাই!
বাহ্ অসাধারণ