প্রিয় পাঠক, শুভেচ্চছা জানবেন। আপনি আমাদের এই ব্লগে এসেছেন মানেই হচ্ছে আপনি প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানতে চান, তাই তো? আপনার জানতে চাওয়া তথ্য জানানোই হিজিবিজি ব্লগার টিমের দ্বায়িত্ব। চলুন জেনে নেয়া যাক বাংলায় প্রতিবেদন লেখার নিয়ম। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রতিবেদনের প্রয়োজন হলেও, এটা সবসময় প্রয়োজন পরে না বলে আমরা অনেকেই বাংলায় প্রতিবেদন লেখার নিয়ম জানিনা। তাছাড়াও, বিষয়ের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেধন লেখার নিয়ম ও ফর্মেট পরিবর্তন হয়ে থাকে, তাই অনেকসময় এটা মনে রাখা কষ্টকর হয়ে যায়।
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম | Protibedon Lekhar Niyom
এর আগে আমাদের প্রকাশিত ব্লগে আমরা দরখাস্ত লেখার নিয়ম ও দিনলিপি লেখার নিয়ম সম্পর্কে জেনেছি। আজকের ব্লগে আমরা বিভিন্ন protibedon lekhar niyom সম্পর্কে জানবো। জানবো বিভিন্ন ধরণের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম। যেমন: সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও নমুনা এবং প্রতিবেদন লেখার কৌশল করবো এই ব্লগে।
প্রতিবেদন কি | What is Report Writing?
কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা ঘটনার প্রয়োজনীয় তথ্যসম্বলিত অনুসন্ধানমূলক বিবরণকে প্রতিবেদন বলা হয়। ইংরেজিতে এটিকে “Report” বলা হয়, আর যিনি প্রতিবেদন তৈরি করেন, তিনি প্রতিবেদক নামে পরিচিত।
প্রতিবেদকের প্রধান দায়িত্ব হলো কোনো ঘটনা, তথ্য বা বিবৃতির বিশদ তদন্তের মাধ্যমে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত ও উপস্থাপন করা।
মূলত তথ্যবহুল ও গণমাধ্যমে প্রকাশযোগ্য ভাষায় সংক্ষিপ্ত, সরলভাবে সংবাদ প্রকাশকেই প্রতিবেদন বলা হয়। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে, স্পষ্ট ভাষায় সঠিক তথ্য প্রদান করে পাঠকের কাছে সুস্পষ্ট ধারণা পৌঁছে দেওয়াই প্রতিবেদন লেখার উদ্দেশ্য।
সুতরাং, প্রতিবেদন হলো একটি সুসংগঠিত তথ্যের বিবৃতি, যা নির্দিষ্ট বিষয়ে সংক্ষিপ্ত ও সঠিক বর্ণনা দেয়। এটি যথাযথ পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা, গবেষণা এবং বিশ্লেষণের পর প্রস্তুত করা হয়।
প্রতিবেদন কত প্রকার?
প্রতিবেদনের নির্দিষ্ট কোন প্রকারভেদ নেই। তবে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম প্রচলিত আছে। বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন লেখা হয়ে থাকে। নিচে কিছু প্রতিবেদনের ধরণ উল্লেখ করছি।
- সংবাদ প্রতিবেদন
- প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- দাপ্তরিক প্রতিবেদন
- অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বা তদন্ত প্রতিবেদন
- গবেষণামূলক প্রতিবেদন
- প্রস্তাবনা প্রতিবেদন
- ঘোষণা প্রতিবেদন
- পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদন বা নিয়মিত প্রতিবেদন
- বিশেষ প্রতিবেদন
- সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদন
- রাজনৈতিক প্রতিবেদন
- সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন
১. সংবাদ প্রতিবেদন
কোন সংবাদ পত্র বা ম্যাগাজিনে প্রকাশের জন্য লেখা প্রতিবেদনকে সংবাদ প্রতিবেদন বলে।
২. প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
কোন প্রতিষ্ঠানের মাসিক, দ্বিমাসিক, ত্রৈমাসিক বা বার্ষিক পরিকল্পনা নিয়ে যে প্রতিবেদন হয়, তাকে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলে।
৩. অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
যদিও নামে এটিকে অপ্রতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন, তবে এটি মূলত একটি খসড়া প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন বলা যেতে পারে। অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন সাধারণত প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের চেয়ে আকারে ছোট হয়।
৪. দাপ্তরিক প্রতিবেদন
প্রাতিষ্ঠানিক ঘটনা, অবস্থা, স্থান, পরিস্থিতি ইত্যাদি যাচাই করে প্রাসঙ্গিক তথ্য, তত্ত্ব এবং উপাত্ত যে প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা হয়, তাকে দাপ্তরিক প্রতিবেদন বলে।
৫. অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বা তদন্ত প্রতিবেদন
কোনো ঘটনার সত্যতা বা গভীরতা যাচাই করার জন্য রচিত প্রতিবেদনকে অনুসন্ধানী বা তদন্ত প্রতিবেদন বলে। অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের পর্যবেক্ষণ একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
৬. গবেষণামূলক প্রতিবেদন
নির্দিষ্ট বিষয়ে গবেষণা বা জরিপ করে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয় তাকে গবেষণা প্রতিবেদন বলে। গবেষণা প্রতিবেদনে তথ্য ও উপাত্ত বেশি থাকে। গবেষণা প্রতিবেদনে গবেষক বা প্রতিবেদকের মতামতের প্রতিফলন থাকে না বললেই চলে।
৭. প্রস্তাবনা প্রতিবেদন
সমস্যার সমাধান ও পরিকল্পনা বা প্রকল্প প্রণয়নের জন্য নিজের প্রস্তাব যে প্রতিবেদনে উপস্থাপন করা হয় তাকে প্রস্তাবনা প্রতিবেদন বলে। প্রকল্পের ভালো-মন্দ পর্যালোচনা করে একটি প্রস্তাবনা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
৮. ঘোষণা প্রতিবেদন
ঘোষণা প্রতিবেদন সাধারনত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দ্বারা লেখা হয়, যা বিভিন্ন পণ্য, পরিষেবা বা সমস্যা সম্পর্কে ঘোষণা করে প্রতিবেদন লিখে।
৯. পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদন বা নিয়মিত প্রতিবেদন
যদি কোনো প্রতিবেদন কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে লেখা হয়, তাকে পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদন বা নিয়মিত প্রতিবেদন বলে বলে। এটি সাধারনত দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক, বার্ষিকভাবে প্রকাশিত হয়ে থাকে।
১০. বিশেষ প্রতিবেদন
কোনো প্রতিবেদনের বিশেষ গুরুত্ব থাকলে বা বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হলে প্রতিবেদনটিকে বিশেষ প্রতিবেদন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। বিশেষ প্রতিবেদন প্রায়ই সময় ট্রেন্ড-নির্ভর হয়।
১১. সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদন
কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদন লেখা হলে তাকে সাক্ষাৎকার প্রতিবেদন বলে। এক্ষেত্রে বিষয়ের সাথে মিল রেখে কার সাক্ষাৎকার নেয়া হবে তা ঠিক করা হয়।
১২. রাজনৈতিক প্রতিবেদন
রাজনৈতিক ঘটনাভিত্তিক প্রতিবেদনকে রাজনৈতিক প্রতিবেদন বলা হয়। সাধারণত রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক দলের মিডিয়া সেল এই প্রতিবেদন করে থাকে।
১৩. সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন
সাংস্কৃতিক কোনো অনুষ্ঠান বা আয়োজনের উপর ভিত্তি করে রচিত প্রতিবেদনকে সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন বলে। আয়োজক কমিটিও অনেক সময় এই প্রতিবেদন করে। আবার সাংবাদিকও করে থাকে
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম | Bangla potibedon lekhar niyom
প্রতিবেদন লেখার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে, যা “প্রতিবেদন লেখার নিয়ম” নামে পরিচিত। প্রতিবেদনটি যে ঘটনার উপর ভিত্তি করে লেখা হবে, তার সম্পূর্ণ ও সঠিক বিবরণ এতে থাকা জরুরি। প্রতিবেদন লেখার প্রধান নিয়মগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে লেখা। প্রতিবেদনে প্রতিবেদকের ব্যক্তিগত আবেগ-অনুভূতির কোনো প্রভাব থাকতে পারবে না। ঘটনাটি যেমন ঘটেছে, তেমনিভাবে উপস্থাপন করাই হলো আদর্শ প্রতিবেদনের মূল বৈশিষ্ট্য।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদনের বেসিক স্ট্র্যাকচারটা নিচে উপস্থাপন করছি, এতে করে আপনাদের সুবিধা হবে আশা করি।
তারিখ: ২২ জানুয়ারী, ২০২৪
বরাবর,
(যার কাছে প্রতিবেদন পেশ করা হবে তার পদবী)
প্রতিষ্ঠানের নাম
প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা।
বিষয় : ___________________________________________________ বিষয়ে প্রতিবেদন।
সূত্র/স্মারক নং: জেবিএল/সিএডি/প্রতিবেদন/২০২১-১ তারিখ: ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১।
জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে, আপনার আদেশ নং জেবিএল/সিএডি/প্রতিবেদন/২০২১-১ তারিখ: ০৯ জানুয়ারী, ২০২৪ অনুসারে (বিষয়ে যা লিখেছেন তা লিখবেন) … … … উপলক্ষে প্রতিবেদনটি নিম্নে পেশ করছি।
(প্রতিবেদনের শিরোনাম)
বিবরণ: প্রয়োজন অনুসারে ৩/৪টি অনুচ্ছেদ।
মতামত:
প্রতিবেদকের স্বাক্ষর
প্রতিবেদনের বিষয়
প্রতিবেদনের সময়
প্রতিবেদনের তারিখ
প্রতিবেদনের স্থান
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা
সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম | Newspaper Report Writing
সংবাদ প্রতিবেদন প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সংবাদ প্রতিবেদনের একটি ভালো শিরোনাম প্রয়োজন। এখানে শিরোনাম খুব গুরুত্বপূর্ণ। শিরোনামের মাধ্যমেই খবরের সারমর্ম প্রকাশ পেতে হবে। শিরোনামের উপর ভিত্তি করেই পাঠকরা সিদ্ধান্ত নেবেন খবর পড়বেন কি পড়বেন না। অতএব, শিরোনামটি আকর্ষণীয় এবং সংক্ষিপ্ত হওয়া সত্বেও সারমর্ম বোঝাতে সক্ষম হতে হবে।
শিরোনামের পর থাকবে প্রতিবেদকের পরিচিতি। এই বিভাগে প্রতিবেদকের নাম, ঘটনা বা রিপোর্টের অবস্থান উল্লেখ করতে হয়। এরপর দুই থেকে তিন লাইনে ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়। তারপর বিস্তারিত আলোচনা।
সংবাদ প্রতিবেদন এর কাঠামো
১. শিরোনাম: প্রতিবেদন লেখার সময় এমন একটি শিরোনাম ব্যবহার করতে হবে, যা প্রতিবেদনটির বিষয়কে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে এবং পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
২. ভূমিকা: ভূমিকা অংশে সংবাদের সারমর্ম তিন বা চার লাইনের মধ্যে প্রকাশ করা উচিত। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আকর্ষণীয় ভূমিকা পাঠককে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে উদ্বুদ্ধ করে। তাই এই অংশে বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন।
৩. সূত্র: প্রতিবেদনটি যদি কোনো বিজ্ঞপ্তি বা নির্দিষ্ট সূত্রের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়, তবে সেই উৎসটি এই অংশে উল্লেখ করতে হবে।
৪. ব্যক্তিনাম পরিহার: প্রতিবেদনে ব্যক্তির নাম এড়িয়ে চলা উচিত। নামের পরিবর্তে পদবী (যেমন সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক) বা সাধারণ পরিচয় (যেমন বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা, কারখানার কর্মী, প্রভাবশালী স্থানীয় বাসিন্দা) ব্যবহার করা উত্তম। এটি পাঠকদের কাছে সংবাদটির সারাংশ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান করে।
৫. অন্যান্য তথ্য: সংবাদ প্রতিবেদনে স্থান, সময়সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য যথাযথভাবে প্রদান করা প্রয়োজন।
প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য
একটি ভালো প্রতিবেদন লেখার জন্য প্রতিবেদন লেখার নিয়মগুলো বোঝা জরুরি। তথ্য এবং পরিসংখ্যান একত্রিত করা এবং অপ্রয়োজনীয় বাক্য এড়ানো একটি ভাল প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্য। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে একটি প্রতিবেদন লেখার সময়, প্রতিবেদনের ফরম্যাট, আকার, শ্রেণি, পাঠকের মনস্তত্ত্ব বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদনের নির্দিষ্ট কোন আকার নেই। যাইহোক, একজন ভালো প্রতিবেদকের গুণ হলো একটি বিষয়কে পুরোপুরি বোঝার জন্য একজন পাঠকের কাছে কতটা বর্ণনা করা প্রয়োজন তা বোঝা। বিষয়ের গুরুত্ব এবং পরিধির উপর নির্ভর করে প্রতিবেদনের আকার বড়, ছোট বা মাঝারি হতে পারে। বড় আকারের প্রতিবেদনকে বই আকারে প্রকাশ করা হয়, সেক্ষেত্রে সারণি, চিত্র, নকশা, ছক ইত্যাদির সমন্বয় করা হয়।
সুন্দর প্রতিবেদন লেখার কৌশল
একটি ভাল প্রতিবেদন লেখার জন্য, প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু সম্পূর্ণরূপে বোঝা ও ভালো ধারণা থাকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই সঠিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম মেনে চলার বিকল্প নেই। আপনি যদি নিয়মিত এবং পরিশ্রমের সাথে প্রতিবেদন লেখার অনুশীলন করেন তবে চমৎকার প্রতিবেদন লেখার দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব।
উপরের প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুসরণ করুন এবং একটি ভাল প্রতিবেদন লিখতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মাথায় রাখুন।
প্রতিবেদন লেখার সময় লক্ষণীয় বিষয়সমূহ
১. সুনির্দিষ্ট কাঠামো
প্রতিবেদন লেখার সময় নির্দিষ্ট নিয়ম ও কাঠামো অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের প্রতিবেদন ভিন্ন ভিন্ন কাঠামো অনুসরণ করা হয়। এই ব্লগে তেমনই বিভিন্ন ধরনের কাঠামো উল্লেখ করা হয়েছে।
২. নির্ভুল তথ্য
সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা বাঞ্ছনীয়। তথ্যানুসন্ধানই প্রতিবেদনের এর প্রধান কাজ। এই কারণেই তথ্যের নির্ভুলতার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। নির্দিষ্ট ঘটনা বা বিষয়ের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনগুলি বস্তুনিষ্ঠ এবং বাস্তবসম্মত হওয়া উচিত।
প্রতিবেদকের অবশ্যই তাদের পাঠকদের মনোরঞ্জনকারী পাশাপাশি অবশ্যই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করতে হবে। একটি ভাল প্রতিবেদন লেখার জন্য, প্রতিবেদকের প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু সম্পূর্ণরূপে বোঝা গুরুত্বপূর্ণ।
৩. তথ্যের পরিপূর্ণতা
নির্ভুল, সম্পূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়া প্রতিবেদনকে স্বার্থক বলা যায় না। এতে প্রতিবেদকের আবেগ-অনুভুতির জনে যায়গা থাকা যাবে না।
৪. স্পষ্ট বক্তব্য ও সুন্দর উপস্থাপনা
প্রতিবেদন স্পষ্ট, আকর্ষণীয় ও পরিপাটি হতে হবে, যাতে বিষয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা লাভ করা যায় এবং সকলের বোধগম্য হয়। অপরিচিত শব্দ প্রতিবেদনে ব্যবহার না করাই শ্রেয়। সংবাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশই এজন্য শুধু প্রতিবেদনে স্থান পেতে পারে, যেগুলো সুস্পষ্ট বার্তা প্রদান করে।
৫. সংক্ষিপ্ততা
প্রতিবেদনের বক্তব্য হতে হবে সুনির্বাচিত ও গোছানো। অযাচিত বক্তব্য পরিহার করে গতিশীল বক্তব্য ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ।
৬. তথ্যসূত্র উল্লেখ
তথ্যসূত্র প্রতিবেদনকে শক্তিশালী করে তোলে। এক্ষেত্রে সূত্রের নির্ভরযোগ্যতার উপর প্রতিবেদকের নজর রাখতে হবে। কোন পত্রিকার নিউজ যেমন তথ্য সুত্র হতে পারে, তেমনই নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তির বক্তব্যকে কোট করেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
৭. কখনোই ঢালাও মন্তব্য নয়
নির্ভরযোগ্য তথ্য-প্রমান ছাড়া কোনধরণের মন্তব্য করা যাবে না। এটা প্রতিবেদন ও প্রতিবেদক দুইয়ের জন্যই ক্ষতিকর। প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে শব্দচয়ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা
প্রতিবেদন লেখা নিয়ম আপনাদের কিছুটা জটিল মনে হতে পারে। কিন্তু নিয়মিত চর্চা করলে প্রতিবেদন লেখার নিয়মকানুন খুব সহজেই শিখে ফেলতে পারবেন।
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম খুব সহজে শেখার জন্য বারবার চর্চা করার কোনো বিকল্প নেই। শুদ্ধ ভাষার ব্যবহার করে, নির্দিষ্ট ফরম্যাট অনুসারে সহজেই প্রতিবেদন লেখা যায়। হিজিবিজি এই ব্লগে উল্লেখিত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও নমুনার বিষয়গুলোর উপর লক্ষ্য রেখে প্রতিবেদন লেখা হলে আপনার প্রতিবেদনটি প্রশংসিত হবে, বলে আশা করা যায়।
প্রতিবেদন কিভাবে লিখতে হয়?
প্রতিবেদন লেখা কাকে বলে ও উদাহরণ দাও?
প্রতিবেদন এর অর্থ কি?
প্রতিবেদনে কি খাম লিখতে হয়?
৬ টি প্রতিবেদন লেখার নিয়ম pdf (উদাহরণ)
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সংক্রান্ত FAQ
কোন নির্দিষ্ট বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য সংবলিত অনুসন্ধান ভিত্তিক বিবরণীকে প্রতিবেদন বলে। প্রতিবেদনের ইংরেজি প্রতিশব্দ Report।
যিনি প্রতিবেদন তৈরি করেন, তাকে প্রতিবেদক বলা হয়। প্রতিবেদকের দায়িত্ব হলো কোন ঘটনা, তথ্য বা বিবৃতি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত বা ফলাফলের বিস্তারিত তদন্ত সাপেক্ষে একটি প্রতিবেদন তৈরি করা এবং পেশ করা।
প্রতিবেদনের নির্দিষ্ট প্রকারভেদ নেই। তবে এটি অনেক প্রকার হতে থাকে। যেমন:
- সংবাদ প্রতিবেদন
- প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- অপ্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন
- দাপ্তরিক প্রতিবেদন
- অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বা তদন্ত প্রতিবেদন
- গবেষণামূলক প্রতিবেদন
- প্রস্তাবনা প্রতিবেদন
- ঘোষণা প্রতিবেদন
- পর্যায়ক্রমিক প্রতিবেদন বা নিয়মিত প্রতিবেদন
- বিশেষ প্রতিবেদন
- সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রতিবেদন
- রাজনৈতিক প্রতিবেদন
- সাংস্কৃতিক প্রতিবেদন
কোন নির্দিষ্ট বিষয় বা ঘটনা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধান করে বিস্তারিত আকারে প্রতিবেদন লিখতে হয়।
একটি বিষয়ের উপর বিস্তারিতভাবে লেখার একটি আনুষ্ঠানিক শৈলীকে প্রতিবেদন লেখা বলে।
‘প্রতিবেদন’ শব্দটি ইংরেজি “Report” শব্দের বাংলা পরিভাষা। “Report” শব্দটির বাংলা আভিধানিক অর্থ হলো – সমাচার, বিবরণী বা বিবৃতি।
প্রতিবেদন লেখায় কোনো খাম দিতে হয় না। তবে প্রতিবেদন লেখা শেষে প্রতিবেদক ও প্রতিবেদন সম্পর্কিত একটি তথ্য-ছক দিতে হবে। সংবাদ প্রতিবেদন লিখনে প্রতিবেদককে অবশ্যই নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক হতে হবে।
আরো পড়ুন: আবেদন পত্র লেখার নিয়ম বাংলা | দরখাস্ত লেখার নিয়ম ছবি সহ ২০২৪
নির্বাচিত ব্লগ: প্রতিবর্তন ব্লগ থেকে