30-november-and-buddhadeb-boshu

৩০ নভেম্বর ও বুদ্ধদেব বসু

বুদ্ধদেব বসু ছিলেন একজন বাঙালি কবি, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, অনুবাদক, সম্পাদক ও সাহিত্য সমালোচক। তিনি বিংশ শতাব্দীর বিশ ও ত্রিশের দশকে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন। তার সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।

বুদ্ধদেব বসু ১৯০৮ সালের ৩০শে নভেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ভূদেব বসু ছিলেন একজন উকিল এবং মাতা বিনয়কুমারী। বুদ্ধদেব বসুর পৈতৃক আদি নিবাস ছিল বিক্রমপুরের মালখানগর গ্রামে। জন্মের চব্বিশ ঘণ্টা পরেই তার মাতা বিনয়কুমারীর ১৬ বছর বয়সে ধনুষ্টঙ্কার রোগে মৃত্যু ঘটে। এতে শোকাভিভূত হয়ে তার পিতা সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করে গৃহত্যাগ করেন।

বুদ্ধদেব বসু ছাত্রজীবন থেকেই সাহিত্য চর্চায় আগ্রহী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে বি.এ অনার্স ও এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। বি.এ. অনার্স পরীক্ষায় তিনি যে নম্বর লাভ করেন তা একটি রেকর্ড; এবং অদ্যাবধি (২০২১) এ রেকর্ড অক্ষুণ্ণ আছে।

বুদ্ধদেব বসু ১৯২৫ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ মর্মবানী প্রকাশ করেন। তার অন্যান্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো, মর্মবানী’ (১৯২৫), বন্দীর বন্দনা (১৯৩০), একটি কথা (১৯৩২), পৃথিবীর পথে (১৯৩৩), কঙ্কাবতী (১৯৩৭), দময়ন্তী (১৯৪৩), দ্রৌপদীর শাড়ি (১৯৪৮), শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৩), শীতের প্রার্থনা: বসন্তের উত্তর (১৯৫৫), যে-আঁধার আলোর অধিক (১৯৫৮), দময়ন্তী: দ্রৌপদীর শাড়ি ও অন্যান্য কবিতা (১৯৬৩), মরচেপড়া পেরেকের গান (১৯৬৬), একদিন: চিরদিন (১৯৭১), স্বাগত বিদায় (১৯৭১)

বুদ্ধদেব বসু কবিতার পাশাপাশি কথাসাহিত্যেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনী, অনুবাদ, স্মৃতিকথা ও সম্পাদনা; সাহিত্যের সকল ক্ষেত্রেই ছিল তার অবদান। 

বুদ্ধদেব বসু ছিলেন একজন প্রকৃত শিল্পী। তার সাহিত্যকর্মে গভীর জীবনদর্শন ও সমাজচেতনা ফুটে উঠেছে। তিনি বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য প্রতিভা। তার সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ।

বুদ্ধদেব বসু ১৯৭৪ সালের ১৮ই মার্চ কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

Share this article
0
Share
Shareable URL
Prev Post

২৯ নভেম্বর ও ট্রাফিক লাইট

Next Post

বুক রিভিউ: রেজাউল ইসলাম আজিম-এর বই মেরিন ড্রাইভ | সাইফা শান্তা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Read next
0
Share