কাজী নজরুল ইসলাম হলেন একজন বিদ্রোহী কবি। তিনি সবসময় তার রচনার মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তার রচনায় ছিল স্বাধীনতা, সাম্য ও মানবতার শ্লোগান। এ কারণে ব্রিটিশ সরকার তাকে রাজদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করে।
১৯২২ সালের ২৩ নভেম্বর কুমিল্লার ঝাউতলা মোড় থেকে কাজী নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাকে প্রেসিডেন্সি জেলে আটক করে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে ‘ধূমকেতু’ পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতা ও প্রবন্ধের ভিত্তিতে রাজদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়।
১৯২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি কলকাতার চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে কাজী নজরুলের বিচার শুরু হয়। মামলার অপর আসামী ছিলেন ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার প্রকাশক আফজালুল হক। বিচারে কাজী নজরুলকে এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এছাড়াও, ব্রিটিশরাজ কাজী নজরুলের বেশ কয়েকটি বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। নিষিদ্ধ বই ও নিষিদ্ধের সালগুলো হলো:
- নজরুল সম্পাদিত পত্রিকা – ধূমকেতু (১৯২২)
- যুগবাণী (১৯২২)
- বিষের বাঁশি (১৯২৪)
- ভাঙার গান (১৯২৪)
- প্রলয়শিখা (১৯৩১)
- চন্দ্রবিন্দু (১৯৩১)
কাজী নজরুল ইসলামের গ্রেফতার ও বই নিষিদ্ধকরণ ছিল ব্রিটিশ সরকারের এক নিকৃষ্ট ও বর্বরোচিত পদক্ষেপ। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে নিভিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু নজরুল ছিলেন একজন অপ্রতিরোধ্য ব্যক্তি। তার রচনা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে এবং আজও মানুষের হৃদয়কে আন্দোলিত করে।
উল্লেখ্য যে, সম্প্রতি এ আর রহমান কর্তৃক রিমেককৃত গান, “কারার ঐ লৌহ কপাট” ভাঙার গান কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতা।
ভাউ , কাজী নজরুলের বিদ্রোহ একটি মাত্র বইয়ে আটকে গেছে। আর তার বাকীসব রচনা রোমান্টিকতায় আশ্রিত, পর্যবসিত। তিনি প্রধানত রোমান্টিক কবি। বিদ্রোহ তার সাময়িক উত্তেজনার ফসল মাত্র। অনেকটা বীর্যপাতের মত।